Wednesday, February 23, 2011

সোমালিয়ায় অপহৃত ৪ আমেরিকান নাবিককে হত্যা


 (শীর্ষ নিউজ ডেস্ক): ওমান উপকূল থেকে অপহৃত ৪ আমেরিকান নাবিককে সোমালি জলদস্যুরা হত্যা করেছে। গত শুক্রবার সোমালি জলদস্যুরা তাদের অপহরণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী জানায় যে, তারা অপহরণের খবর পাওয়ার পর পরই একটি জাহাজ ঘটনাস্থলে পাঠায় এবং অপহরণকারীদের জাহাজ অনুসরণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা গুলির শব্দ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছেন। পরে জাহাজে আরোহন করে ২ জলদস্যুকে হত্যা করে অপহৃত ৪ আমেরিকান নাবিককেই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে। যুক্তরাষ্ট্রের নৌ-সেনারা গুলিবিদ্ধ নাবিকদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নাবিকরা মারা যায়। জাহাজে মৃতদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ২ জন নাগরিকও রয়েছে। নৌ-সেনারা এ সময় ১৩ জলদস্যুকে আটক করেছে।

লোভী স্ত্রীর কারণে ক্ষমতাচ্যুত আবিদিন


মানবজমিন ডেস্ক: তিউনিসিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট জিনে আল আবিদিন বিন আলীর স্ত্রী লাইলা দেশবাসীর কাছে পরিচিতি পেয়েছেন লোভী নারী হিসেবে। তাকে তুলনা করা হচ্ছে ইমেলদা মার্কোসের সঙ্গে। বলা হচ্ছে, তিনি হলেন আরবের ইমেলদা মার্কোস। তার কারণেই ডুবেছেন আবিদিন। তার ছিল পর্বত সমান লোভ। তিনি সাবেক এক হেয়ারড্রেসার। গণবিস্ফোরণের সময় তার স্বামী যখন দেশ ছেড়ে পালান তখন লাইলার প্রথম পছন্দ ছিল দুবাই। সেখানে তারা রাজনৈতিক আশ্রয় নিলে তিনি ভাল কেনাকাটা করতে পারতেন। কিন্তু তার স্বামী বেছে নিয়েছেন সৌদি আরবকে। প্রেসিডেন্ট আবিদিনের বয়স ৭৪ বছর। তার স্ত্রী তার চেয়ে ২০ বছরেরও ছোট। তার নেশাই ছিল অর্থ, বিলাসবহুল গাড়ি, প্রাচুর্যময় বাড়ি। দেশবাসী যখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য হিমশিম খাচ্ছিলেন তখন তাদের বিলাসী জীবনযাপনের কারণে ফার্স্ট ফ্যামিলিকে অনেকে ‘দ্য মাফিয়া’ বলেও অভিহিত করেন। এসব কথা গতকাল বলা হয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইলে। জন ক্ষোভ তাই ঝরে পড়েছে তাদের বিলাসী গাড়িতে, বাড়িতে। আর এই ফাঁকে তাদের দুই কন্যা পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন প্যারিসের ডিজনিল্যান্ড হোটেলে। সেখানে তারা ব্যবহার করছেন ভিআইপি স্যুট। যার প্রতি রাতের ভাড়া ৩০০ পাউন্ড। তারা হলেন নাসরিন বিন আলী (২৪) ও তার বোন সাইরিন। তবে তারাও সুখে থাকতে পারছেন না। কারণ রোববারই ফরাসি সরকার ঘোষণা দিয়েছে সাবেক ওই প্রেসিডেন্টের পরিবারের সদস্যদের বহিষ্কার করা হবে। ধারণা করা হয়, এই পরিবার ফ্রান্সের ব্যাংকে ৩৫০ কোটি পাউন্ড জমা করেছেন।

লিবিয়ায় আতঙ্কে বাংলাদেশীরা কমিউনিটি সেন্টারে ৪৫০ জিম্মি


দীন ইসলাম: লিবিয়ায় জিম্মি থাকা ৪৫০ বাঙালি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। অঘটনের আশঙ্কায় বাইরে বেরুচ্ছেন না তারা। চলছে তীব্র খাবার সঙ্কট। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জিম্মি বাঙালিরা সুস্থ আছেন। তাদের আটক করে রাখা হয়েছে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে ১৩০০ কিলোমিটার দূরে বেনগাজি দারনায়। ওই জায়গার ‘দারনা কমিউনিটি সেন্টার’-এ তাদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের ক’জন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও জিম্মি থাকা ক’জন বাঙালি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে গতকাল লিবিয়ায় জিম্মি থাকা বাংলাদেশীদের সম্পর্কে সবিস্তারে অবহিত করেন ওই দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত প্রথম সচিব (শ্রম) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমেদ খান ও যুগ্ম-সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, জিম্মি থাকা বাংলাদেশীরা লিবিয়ার ‘অওন কনস্ট্রাকশন’ নামের একটি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। রিয়েল এস্টেট ব্যবসার এ কোম্পানিটির মালিক একজন কোরিয়ান নাগরিক। গত রোববার এ কোম্পানিটির শ্রমিকদের ব্যারাকে হামলা চালায় লিবীয় নাগরিকরা। ওই ব্যারাকে বাংলাদেশী শ্রমিকের পাশাপাশি ভিয়েতনাম, কোরিয়া ও থাইল্যান্ডের শ্রমিকরা থাকতেন। একসঙ্গে সবার ওপর হামলা চালানোর পরপরই শ্রমিকরা বেনগাজির একটি মাদরাসায় গিয়ে আশ্রয় নেন। এরপর সরকারের নিয়োজিত বাহিনী তাদের সরিয়ে একটি কমিউনিটি সেন্টারে জিম্মি করে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এখন তীব্র খাবার সঙ্কটে পড়েছেন জিম্মিরা। এজন্য লিবিয়ার অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস কোরিয়ান কোম্পানি ‘অওন কনস্ট্রাকশন’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন জিম্মি থাকা বাঙালিদের খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য। ওদিকে লিবিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে ৬০ হাজার বাংলাদেশী কাজ করছেন। রাজনৈতিক হাঙ্গামা শুরু হওয়ার পর ওইসব বাঙালি এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্কটের মধ্যেও ১১ শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তা ঢাকায়
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এখন চলছে রাজনৈতিক সঙ্কট। এর মধ্যেও ১১টি দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত ১৪ জন শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তাকে ঢাকায় ডেকে আনা হয়েছে। তাদেরকে ওই সব দেশে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এনিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কয়েক জন শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তার মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে এখন চলছে রাজনৈতিক সঙ্কট। এ সঙ্কটে বাংলাদেশী শ্রমিকদের প্রতি নজর দেয়া জরুরি। এর অন্যথা হলে শ্রমিকদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবের রিয়াদ ও জেদ্দা এবং মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে কর্মরত কাউন্সিলর (শ্রম) ও প্রথম সচিব (শ্রম), লিবিয়া, ইরাক, বাহরাইন, কুয়েত, দুবাই, কাতার ও ওমানের প্রথম সচিব (শ্রম) এবং আবু ধাবির কাউন্সিলরকে (শ্রম) ঢাকায় আনা হয়েছে। আগামী দুই দিন জনশক্তি বাড়ানোর বিষয়ে তাদের নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল প্রথম দিনে শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানির হার এখন আশানুরূপ নয়। এখনই বিষয়টির দিকে নজর দিতে হবে। অন্যথায় আগামীতে ভাল করতে পারবো না। এরপর তিনি বিভিন্ন দেশে কর্মরত শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তাদের বক্তব্য শোনেন। এর মধ্যে লিবিয়ায় কর্মরত প্রথম সচিব (শ্রম) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী ওই দেশে কর্মরত বাঙালিদের সর্বশেষ অবস্থা বর্ণনা করেন। এরপরের সেশনে বক্তব্য দেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমেদ খান। তারা শ্রম বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ় করার উপর গুরুত্ব দেন।
বাংলাদেশে লিবীয় রাষ্ট্রদূতের পদত্যাগ
বাংলাদেশে নিযুক্ত লিবীয় রাষ্ট্রদূত আহমেদ আতিয়া হামাদ আল-ইমান পদত্যাগ করেছেন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে নিশ্চিত করেছে লিবিয়া সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, রাষ্ট্রদূতের পদত্যাগের জন্য ঢাকায় লিবীয় দূতাবাসের অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি (কো-অপারেশন) এশতিউই এলফিলাইদনি চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ওদিকে লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফীর ৪১ বছরের শাসনের অবসান ঘটাতে দেশটির হাজার হাজার মানুষ গত বুধবার থেকে বিক্ষোভ করছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্য অনুযায়ী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি ও সংঘর্ষে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৩৩ জন নিহত হয়েছে। এই সহিংসতা ও সরকারের দমন নীতির প্রতিবাদে চীন, যুক্তরাজ্য, ভারত, পোল্যান্ড, সুইডেন, আরব লীগ, বেলজিয়াম, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়া ও জাতিসংঘে নিযুক্ত লিবিয়ার উপরাষ্ট্রদূত এবং কয়েকটি দেশে লিবিয়ার দূতাবাসের বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানানো হয়।

বরিশালের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী খাদ্যমূল্য যতই বাড়ুক সমস্যা নেই


                                     
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খাদ্যের মূল্য যতই বাড়ুক তা নিয়ে সমস্যা নেই, দেশে খাদ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। এজন্য তিনি দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ করার আহ্বান জানান। দেশের কৃষকরা এবার  ধান, পাটের ন্যায্য দাম পেয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। গতকাল বরিশালে আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতুসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন শেষে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে দেশের মানুষকে কিছু দিয়ে যায়।
দুপুর আড়াইটায় কীর্তনখোলা নদীর ওপর নির্মিত আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র শওকত হোসেন হিরণ। বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, যোগাযোগমন্ত্রী  সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. শাজাহান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের সব উন্নয়ন আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। তার কাছে কোন দাবির প্রয়োজন নেই। একে একে সব উন্নয়নই সম্পন্ন করা হবে। তিনি কুয়াকাটাকে পর্যটন কেন্দ্র করে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার অঙ্গীকার করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা এনে দিতে পারলেও মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিতে পারেননি। তার আগেই তাকে জীবন দিতে হয়েছে। বর্তমান সরকার মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য প্রাণপণ কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, এজন্য তাকে যদি তার পিতা, ভাইদের মতো জীবন দিতে হয় তাতেও আপত্তি নেই।
শেখ হাসিনা প্রায় ২৭ মিনিটের বক্তব্যে বরিশালের সেতু, আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শিক্ষা বোর্ডের নবনির্মিত ভবন এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কথা এ সরকার সব সময়ই ভাবে। তিনি বলেন, সমপ্রতি অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে ১৯টির মধ্যে ১৮টি পৌর চেয়ারম্যানের পদ আওয়ামী লীগকে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ উপহার দিয়েছে। এর যথাযথ সম্মান তিনি দেবেন বলে অঙ্গীকার করেন। আগামীতে বরিশালে একটি মেরিন একাডেমি, দু’টি স্কুলকে সরকারিকরণ, বরিশাল-পিরোজপুর সড়কের ওপর বেকুটিয়া সেতু, বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কের লেবুখালী ব্রিজ নির্মাণ, ভোলায় একটি সার কারখানা নির্মাণসহ একাধিক অঙ্গীকার করেন। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় একটি পৃথক ভবনে হবে। এ বছরই কাজ শুরু এবং আগামী শিক্ষা বছর থেকে ক্লাস হবে বলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন।  প্রধানমন্ত্রী দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই পৌঁছে দেয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, এতে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার কমেছে, ক্লাসে উপস্থিতি বেড়েছে শিক্ষার্থীদের। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সোয়া ১১টায় বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন। বেলা ১২টায় আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উদ্বোধন করেন। 

পঞ্চম পরমাণুশক্তিধর বৃটেনকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান


মানবজমিন ডেস্ক: পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যার দিক থেকে পাকিস্তান বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে পরিচিত বৃটেনকে অচিরেই ছাড়িয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। বৃটেনের ডেইলি মেইল এক রিপোর্টে বলছে পাকিস্তান এমন একটি সময়ে সংখ্যার দিক থেকে বৃটেনকে টেক্কা দিতে যাচ্ছে যখন তারা নিজেরাই সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করছে, গত দুই বছরে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের মজুদ প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন সেখানে পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। এর অর্থ হচ্ছে এ অঞ্চলের সবচেয়ে অস্থিতিশীল দেশ হিসেবে পরিচিত পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যার দিক থেকে বৃটেন এবং এ অঞ্চলে তাদের প্রতিবেশী প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। পাকিস্তানে সমপ্রতি প্লুটোনিয়াম এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইউরেনিয়াম উৎপাদন বৃদ্ধির প্রেক্ষিতেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছে। কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ অবশ্য পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা ১১০টি হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছেন। পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে এসব অস্ত্র মজুদ রাখা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করলেও অনেকে বলছেন প্রধান বিমান ঘাঁটির কাছেই সেগুলো রাখা হয়েছে। পাকিস্তানের কাছে এতো বিপুল পরিমাণে পরমাণু অস্ত্র থাকার বিষয়টি এখন সেখানকার ত্রাণ সহযোগিতার ওপর প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার বিষয়টি বিশেষভাবে প্রভাবিত করবে। এখন প্রশ্ন উঠছে, যেখানে বিপুল সংখ্যক জনতা দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছেন সেখানে পরমাণু অস্ত্রের ব্যয় জারদারি প্রশাসন কিভাবে মেটাচ্ছেন। গত বছর পাকিস্তানের বন্যা দুর্গতদের সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক ভাবে লাখ লাখ ডলার তোলা হয়েছে। পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে পড়তে পারে বলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে এক্ষেত্রে সেটা আরও ঘনীভূত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত বেশ কিছু বিজ্ঞানীরও আল-কায়েদার প্রতি দুর্বলতা রয়েছে বলে পশ্চিমা বিশ্ব উদ্বিগ্ন। এ ধরনের অভিযোগে পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানীকে এর আগে আটকও করা হয়েছিল।

বিমান থেকে জনতার ওপর বোমা


লিবিয়ায় বিক্ষোভ-সহিংসতা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। দেশের পূর্বাঞ্চল সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী ও বিদ্রোহী সেনাদের দখলে চলে গেছে। বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত লিবিয়ার রাষ্ট্রদূতেরা বিক্ষোভকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে পদত্যাগ করেছেন। এদিকে বিক্ষোভ দমনে ট্যাংক-যুদ্ধবিমানসহ সামরিক বহর মোতায়েন করেছেন দেশটির নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি। যুদ্ধবিমান থেকে বোমাও ফেলা হয়েছে বিক্ষোভকারীদের ওপর। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে গাদ্দাফি বিক্ষোভকারীদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য নিজের সমর্থকদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। খবর এএফপি, রয়টার্স, বিবিসির।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা টেলিভিশন জানায়, গত সোমবার রাতে ও গতকাল সকালে রাজধানী ত্রিপোলি ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজিতে যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা হয়। এ ছাড়া হেলিকপ্টার ও ট্যাংক থেকে গুলি ছোড়া হচ্ছে।
ত্রিপোলির বাসিন্দা আবদেল মোহাম্মদ সালেহ একটি বিদেশি টেলিভিশনকে বলেন, যা ঘটছে তা অকল্পনীয়। যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার থেকে একের পর এক বোমা ফেলা হচ্ছে। অনেক মানুষ মারা গেছে।
পূর্বাঞ্চলীয় শহর আল-বায়দার এক বাসিন্দা টেলিফোনে রয়টার্সকে জানান, সোমবার রাতে গাদ্দাফি-সমর্থকদের নির্বিচার গুলিতে তাঁর ভাইসহ ২৬ জন নিহত হয়। এ ছাড়া ট্যাংক ও যুদ্ধবিমান থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।
ওই শহরের আরেক বাসিন্দা মাহরি বলেন, ‘চাই বা না চাই, আমাদের এখন মরতেই হবে। এটা পরিষ্কার যে, আমাদের মরা-বাঁচায় তাদের কিছু যায়-আসে না। এটা গণহত্যা।’ শুধু ত্রিপোলি, বেনগাজি, আল-বায়দা নয়, দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলে পড়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও গাদ্দাফির সমর্থকেরা।
পূর্বাঞ্চলীয় তবরুক শহর থেকে রয়টার্সের এক সাংবাদিক জানান, ওই অঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর হ্যানি সাদ মারজা বলেন, ‘পুরো পূর্বাঞ্চল এখন গাদ্দাফির নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এখানে জনগণ ও সেনাবাহিনী হাতে হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে।’
ফাসলুম জেলা থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে ‘ভাড়াটে খুনিদের’ নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা নির্বিচারে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছুড়ছে। তাজুরা জেলা থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সেখানেও বন্দুকধারীরা নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে।
ভারতে লিবিয়া দূতাবাস থেকে পদত্যাগকারী রাষ্ট্রদূত আল-এসাওয়ি জানান, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বোমা হামলা চালাতে সরকার যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে। এ ছাড়া বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার জন্য সরকার বিদেশি নাগরিকদের ভাড়া করছে।
এর আগে জাতিসংঘে নিয়োজিত লিবিয়ার উপরাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম দাব্বাসি জানান, গাদ্দাফি নিজের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে গণহত্যা শুরু করেছেন।
তবে গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল ইসলামের দাবি, বিক্ষোভকারীদের ওপর নয়, বিদ্রোহী সেনাসদস্যদের লক্ষ্য করেই যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা হয়েছে।
এদিকে, গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন গাদ্দাফি। কোনো অবস্থাতেই পদত্যাগ করবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা আমার দেশ। নিজের শেষ রক্তবিন্দু ঝরে পড়া না পর্যন্ত আমি লড়াই করে যাব। পিতৃপুরুষের এই মাটিতে আমি শহীদ হব।’
বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালাতে নিজের সমর্থকদের নির্দেশ দিয়ে গাদ্দাফি বলেন, ‘ওই ইঁদুরগুলোকে ধরে ফেল। রাস্তায় নেমে আস, তাদের যেখানে পাওয়া যায় সেখানেই গুঁড়িয়ে দাও।’
বিক্ষোভকারীরা ‘শয়তানের স্বার্থসিদ্ধির’ জন্যই কাজ করছে জানিয়ে গাদ্দাফি বলেন, যারা বিক্ষোভ করছে, তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
ত্রিপোলিসহ গোটা লিবিয়ার অবস্থা গতকাল ছিল থমথমে। ত্রিপোলিতে তেমন কোনো বড় বিক্ষোভ হয়নি। তবে রাজপথে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহল দেয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। বেনগাজি পুরোপুরি বিদ্রোহীদের দখলে। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের পক্ষে যোগ দিয়েছেন।
ত্রিপোলির বাসিন্দা লিসা গোল্ডম্যান বলেন, ‘গাদ্দাফি যা খুশি তা-ই করতে পারেন, কোনো কিছুতেই তাঁর বাধে না। আমরা জানি, তিনি উন্মত্ত। তার পরও এটা খুবই দুঃখজনক যে, তিনি নিজের দেশের মানুষ মারছেন। নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের কচুকাটা করছেন।’
গাদ্দাফি দাবি করেছেন, বিক্ষোভের মুখে তিনি দেশ ছেড়ে যাননি, রাজধানী ত্রিপোলিতেই আছেন। গাদ্দাফির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তিনি (গাদ্দাফি) দেশ ছাড়বেন না এবং পদত্যাগও করবেন না। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন। গত সোমবার বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলির ঘটনায় লিবিয়া সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
গাদ্দাফির ৪১ বছরের শাসনের অবসান ঘটাতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তুমুল বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে লিবিয়ার মানুষ। এতে এ পর্যন্ত তিন শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। এর মধ্যে সোমবার রাজধানী ত্রিপোলিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিতে মারা যায় ৬০ জনের বেশি।
সোমবার রাত দুইটার দিকে হঠাৎ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখা যায় গাদ্দাফিকে। একটি ভাঙাচোরা ভবনের পাশ থেকে তিনি গাড়িতে গিয়ে উঠছেন। এ সময় বৃষ্টি থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য মাথার ওপর একটি ছাতা ধরে আছেন। টেলিভিশন জানায়, গাদ্দাফিকে সরাসরি দেখানো হচ্ছে। এর আগে গুজব ছড়িয়ে পড়ে তিনি ভেনেজুয়েলায় পালিয়ে গেছেন।
টেলিভিশনে এক মিনিটের মতো কথা বলেন গাদ্দাফি। তিনি বলেন, ‘আমি গ্রিন স্কয়ারে তরুণদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।’ এই স্কয়ারটি ত্রিপোলির উপকণ্ঠেই অবস্থিত। সেখানে ওই দিন বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়।
গাদ্দাফি আরও বলেন, ‘এ কথা প্রমাণ করার জন্যই এসেছি যে আমি ত্রিপোলিতেই আছি, ভেনেজুয়েলায় নয়।’
গাদ্দাফির অন্যতম শীর্ষ সহযোগী নূরি আল-মিসমারি প্যারিসে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গাদ্দাফি ক্ষমতা থেকে সরেও দাঁড়াবেন না, দেশও ছাড়বেন না। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন।
এদিকে হাজার হাজার বিদেশি ত্রিপোলি ছাড়ার চেষ্টা করছে। দেশটির বিভিন্ন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাজার হাজার চীনা নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লিবিয়া সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন।
তুরস্ক তাদের প্রায় তিন হাজার নাগরিককে সরিয়ে নিতে লিবিয়ার বন্দরনগর বেনগাজিতে তিনটি জাহাজ পাঠিয়েছে। ইতিমধ্যে বিমানে করে তারা প্রায় এক হাজার জনকে দেশে নিয়ে গেছে। গতকাল ফ্রান্স তার নাগরিকদের সরিয়ে নিতে একটি বিমান পাঠায়। কিন্তু সেটি ত্রিপোলিতে নামতে না পারায় মাল্টায় অবতরণ করে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের সরিয়ে আনতে বিমান পাঠাচ্ছে।
লিবিয়ার সাবেক উপনিবেশিক শাসক ইতালি বিমানবাহিনীর তিনটি সি-১৩০ বিমান পাঠাচ্ছে। প্রায় দেড় হাজার ইতালীয় লিবিয়ায় আছে।
মিসরের সঙ্গে লিবিয়ার সীমান্ত এখন বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে। এর আগে ওই সীমান্ত থেকে সীমান্তরক্ষীদের প্রত্যাহার করে নেয় লিবিয়া।
লিবিয়ায় অবস্থানকারী মিসরীয়রা ইতিমধ্যে লিবিয়া ছাড়তে শুরু করেছে। মিসর জানিয়েছে, নাগরিকদের দেশে নিয়ে আসতে তারা কমপক্ষে চারটি বিমান পাঠাচ্ছে।
আল-জাজিরা টেলিভিশন জানায়, বিক্ষোভকারীদের ওপর শক্তি প্রয়োগের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন দেশটির বিচারমন্ত্রী মুস্তাফা আবদুল জলিল। তিনি বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ, ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ এবং জাতিসংঘ ও আরব লিগে নিযুক্ত লিবিয়ার কূটনীতিকেরা পদত্যাগ করে বিক্ষোভকারীদের পক্ষ নিয়েছেন।
গত সোমবার টেলিফোনে গাদ্দাফির সঙ্গে কথা বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। এরপর তিনি জানান, লিবিয়া-পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মুন বলেন, ‘আমি তাঁকে (গাদ্দাফি) বলেছি, সভা-সমাবেশ, বাকস্বাধীনতা এবং মানবাধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’
জাতিসংঘের মানবাধিকারের প্রধান নাভি পিল্লাই বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবেই গণ্য হবে।
লিবিয়া-পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল কায়রোতে জরুরি বৈঠকে বসেন আরব লিগের কূটনীতিকেরা। পরে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, লিবিয়ার সরকার বিক্ষোভকারীদের দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত লিবিয়াকে সংস্থার বৈঠকে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।
শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলির ঘটনায় লিবিয়া কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘লিবিয়া সরকারের উচিত দেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা ও সভা-সমাবেশের অধিকারসহ সর্বজনীন অধিকারের প্রতি সম্মান জানানো। অন্যায় রক্তপাত এখনই বন্ধ করার সময়।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মন্ত্রীরা এক বিবৃতিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়নের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

সৌরঝড়ের কারণে পৃথিবীতে নেমে আসতে পারে মহাবিপর্যয়


বিজ্ঞানীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সৌরঝড়ের প্রভাবে পৃথিবীর বুকে শিগগিরই এক বৈশ্বিক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তাঁদের আশঙ্কা, সৌরঝড়ের কারণে মহাকাশে স্থাপিত কৃত্রিম উপগ্রহ এবং বিশ্বজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ-ব্যবস্থাপনা বিকল হয়ে যেতে পারে। আসন্ন ওই মহাবিপর্যয়কে তাঁরা ‘গ্লোবাল ক্যাটরিনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁরা বলেছেন, এতে সারা বিশ্বে অন্তত দুই ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হবে।
যুক্তরাজ্য সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা জন বেডিংটন গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্সের (এএএএস) বার্ষিক সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে এ হুঁশিয়ারি দেন। পরে সংশ্লিষ্ট অন্য বিজ্ঞানীরা তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
তাঁরা বলেছেন, সূর্যের অভ্যন্তরে চলমান অগ্নিঝড়ের দমকা পর্যায়ক্রমে বাড়তে ও কমতে থাকে। প্রতি ১১ বছরে একবার সৌরঝড়ের প্রচণ্ডতা সর্বোচ্চমাত্রায় ওঠে। তাঁরা বলেছেন, হিসাব অনুযায়ী ২০১৩ সালে সর্বোচ্চমাত্রার সৌরঝড় হওয়ার কথা।
একেকটি দমকার সঙ্গে প্রচণ্ড তাপবাহী সৌরশিখা সৌরজগতে ছড়িয়ে পড়ে। এই শিখার সঙ্গে বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তেজস্ক্রিয়তার (ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন) আণবিক বিস্ফোরণ ঘটে। তেজস্ক্রিয় শিখা যখন পৃথিবীর দিকে আসতে থাকে, তখন বায়ুমণ্ডলের বাইরের পরিমণ্ডল বিদ্যুতায়িত হয়ে ওঠে। এতে ভূ-পৃষ্ঠে থাকা মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও মহাশূন্যে প্রতিস্থাপিত কৃত্রিম জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) ভূ-উপগ্রহ এবং অন্যান্য গবেষণা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সমূহ আশঙ্কা থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে অবস্থিত স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের পরিচালক টমাস বগড্যান বলেছেন, জিপিএস আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। এর সঙ্গে বিমান চলাচল, ইন্টারনেট সেবা, টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহ সবকিছু নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে গাড়িতে এক গ্যালন তেল ভরতে গেলেও ইন্টারনেট যোগাযোগের দরকার। এ ব্যবস্থা বিগড়ে গেলে সারা পৃথিবীর যাবতীয় স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যাবে।
আরেকটি বিষয় হলো, সৌরঝড়ে সৃষ্ট প্রচণ্ড শক্তিশালী বিদ্যুৎতরঙ্গ পৃথিবীর ম্যাগনেটোস্ফেয়ারকে আঘাত করলে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক লাইন ও গ্যাসের পাইপলাইনেও সে তরঙ্গে স্পৃষ্ট হতে পারে। এর ফলে বিদ্যুৎব্যবস্থা অচল হয়ে গাঢ় অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে পৃথিবী।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সৌরঝড়ের তেজস্ক্রিয় প্রবাহ প্রতিরোধক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। গার্ডিয়ান অনলাইন।

নরসিংদীতে মসজিদ ও মাজার ভেঙে জমি দখল করেছে আ’লীগ নেতা

ভূঁইফোড় এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা সড়ক ও জনপথের জমি আর ব্রহ্মপুত্র নদ দখল করে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, রাতের অন্ধকারে মসজিদ আর পুরনো মাজার গুঁড়িয়ে দিয়ে অপরাধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। নরসিংদী সদর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে ভগিরথপুরে প্রায় পনের কোটি টাকা মূল্যের এই জমি দখলকারী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর নাম আওলাদ হোসেন মঞ্জু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ম ও সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মসজিদ ও মাজার ভাঙার এ নায়কের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে স্থানীয় জনগণ। এ অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তার দাঙ্গাবাহিনী প্রধান নাছিরকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। কিন্তু পরে তার অপরাধের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে।
দিনরাত তার পালিত বাহিনীর সদস্যরা চারদিক ঘিরে রেখেছে গোটা এলাকা। পুলিশও পিছু হটেছে। তবে পুলিশের দাবি, কেউ মামলা না করায় তারা কোনো অ্যাকশনে যেতে পারছে না। এদিকে জনগণ ভয়ে মামলা না করলেও সড়ক ও জনপথ এবং নদী দখলের কারণে স্থানীয় এসি ল্যান্ড অফিস থেকেও কেন মামলা করা হয়নি, এর কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি সংশ্লিষ্ট দুটি দফতর থেকে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাবিবুর রহমান হাবিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে মুখ না খুললেও পরে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেন। ফোনে ডেকে নিয়ে আসেন অভিযুক্ত আওলাদ হোসেনকে। নদী দখল করার কারণে তাকে স্টুপিড বলে গালিও দেন।
পরে এসি ল্যান্ড নদীতে ভরাটকৃত মাটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য নির্দেশ দিলেও এক মুঠো মাটিও সরাতে দেখা যায়নি।
এদিকে মসজিদ ও মাজার ভাঙার ব্যাপারে অভিযুক্তের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা তা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক অমৃত বাড়ৈ জানান, ধর্ম ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ে টানা-হ্যাচরা করা খুব সেনসেটিভ ব্যাপার। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করার জন্য পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক। তবে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করে কেন প্রতিকার পাওয়া গেল না, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি পুলিশকে ঘটনাটি দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওলাদ হোসেন অন্যায়ভাবে কোনো কিছুই করছেন না দাবি করলেও মসজিদ আর মাজার ভাঙার কথা স্বীকার করেন তিনি। এ এলাকার অনেক মসজিদ-মাদ্রাসা তার টাকায় চলে দম্ভোক্তি করে তিনি আরও বলেন, এই অল্প কিছুদিনের মধ্যে এক কোটি টাকা দান করব কিন্তু লোক পাচ্ছি না। আপনারাই সেই লোক কিনা অন্যের জায়গা দখল করছে।
এদিকে অভিযুক্তের আপন বড় ভাই রতন মিয়া ও স্থানীয় বাসিন্দা শিল্পপতি সাজন ভূঞা জানান, যে মাজারটি রাতের অন্ধকারে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে তার নাম কালু শাহর মাজার। মুরব্বীদের কাছে শুনেছেন, এ মাজারের বয়স আনুমানিক তিনশত বছর। এ মাজার ভাঙায় তার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন এখানকার কয়েক হাজার মানুষ। এ মাজার ভাঙার কারণে যে কোনো সময় আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলেও তারা দাবি করেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার লোকজন জমায়েত হয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই দ্রুুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। তবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, জন বিস্ফোরণ পুলিশের পক্ষে ম্যানেজ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

জাতির উদ্দেশে ভাষণে গাদ্দাফি : আমি বেদুঈন যোদ্ধা : শহীদ হতে জানি : বাংলাদেশী জিম্মি নেই : দীপু মনি


লিবিয়া পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে। প্রেসিডেন্ট মোয়াম্মার আল গাদ্দাফি জাতির উদ্দেশে ভাষণে ক্ষমতা ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, জনতা শান্ত না হলে বলপ্রয়োগে বাধ্য হবেন। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা গেছে, জনতার ওপর বিমান ও হেলিকপ্টার গানশিপ থেকে হামলা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তিন শতাধিক লোক নিহত হয়েছে বলে সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠকে বসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন অসহায় জনসাধারণের ওপর হামলা বন্ধ করতে লিবিয়া কর্তৃৃৃৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। বিরোধীদলের প্রতি এই দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত লিবিয়ার রাষ্ট্রদূতরা এর প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন। রয়টার্স, আল জাজিরা, এএফপি, বিবিসি
এদিকে
লিবিয়ায় শতাধিক বাংলাদেশীকে জিম্মি করা হয়েছে বলে প্রকাশিত খবর সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপু মনি। লিবিয়া থেকে বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।
ওদিকে লাগাতার অশান্তির ফলে লিবিয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাজধানী ত্রিপলিতেও খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দলে দলে সরকারি কর্মকর্তারা পদত্যাগ করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যেই বিমান ও হেলিকপ্টার থেকে বোমা ও রকেট হামলার খবর দিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফির ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে তার অনুগত সৈন্যরা সাধারণ জনতার ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে। লিবিয়া সঙ্কটের এখনও কোনো সমাধানসূত্র দেখা যাচ্ছে না। সরকার ও বিরোধীপক্ষ নিজেদের অবস্থানে অটল রয়েছে।
গাদ্দাফি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে যে গুজব উঠেছিল তা মিথ্যা প্রমাণিত করে গাদ্দাফি গতকাল টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ধিক তাদেরকে যারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আমি বেদুঈন যোদ্ধা। লিবিয়ার গৌরব আমার হাতে অর্জিত হয়েছে। আমি শহীদ হয়ে মরব তবুও দুষ্কৃতকারীদের সুযোগ দেব না। তারা বিশেষ একটি গোষ্ঠী শয়তানের সহায়তায় লিবিয়ায় অশান্তি সৃষ্টির প্রয়াস পাচ্ছে। তিনি বলেন, এখনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করা হয়নি। ওরা শান্ত না হলে শক্তি প্রয়োগ করা হবে বলে তিনি হুশিয়ার করে দেন।
গাদ্দাফি তার অনুগত জনসাধারণের প্রতি এই বিশৃঙ্খলার প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় বেরিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বিভিন্ন দেশে কর্মরত লিবিয়ার কূটনীতিকরা পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন। সেনাবাহিনীতেও বিভক্তির খবর পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম লিবিয়া থেকে স্বাধীনভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে না পারায় সেখানকার সঠিক চিত্র তুলে ধরা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিমানবাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর বোমা হামলা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর একাংশ বেঁকে বসায় আফ্রিকার অন্যান্য দেশ থেকে ভাড়াটে সৈন্য এনে তাদের দিয়ে দমন নিপীড়ন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগও উঠছে। সরকারিভাবে অবশ্য বিক্ষোভকারীদের হত্যালীলার অভিযোগ অস্বীকার করছে। এদিকে লাগাতার অশান্তির ফলে দেশের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমনকি রাজধানী ত্রিপলিতেও খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এদিকে লিবিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠকে বসেছে।
লিবিয়ায় কোনো বাংলাদেশী জিম্মি অবস্থায় নেই : আমাদের কূটনৈতিক রিপোর্টার জানান, লিবিয়ায় কোনো বাংলাদেশী জিম্মি বা আটক অবস্থায় নেই। লিবিয়া থেকে বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে এরই মধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং পররাষ্ট্র সচিব এই তথ্য জানান।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নবনির্বাচিত ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) নির্বাহী কমিটির নেতা ও সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, লিবিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দূতাবাসের মাধ্যমে সেখানকার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। পরে বিকালে মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস বলেন, লিবিয়ায় কোনো বাংলাদেশী আটক বা জিম্মি অবস্থায় নেই। লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এটা নিশ্চিত করেছেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, লিবিয়ায় সার্বিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশীদের অবস্থা নিয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।
লিবিয়া থেকে বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ ব্যাপারে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। লিবিয়ায় এখন ঘোলাটে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি অনুকূল হলে বাংলাদেশীদের সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, লিবিয়া থেকে বাংলাদেশীদের তৃতীয় কোনো দেশে নয়, বাংলাদেশেই ফিরিয়ে আনা হবে। তবে পররাষ্ট্র সচিব স্বীকার করেন, অন্য বিদেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশীরাও আক্রমণের শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত এইচএল আলী ইমাম গাদ্দাফীর পক্ষ ত্যাগ করে পদত্যাগ করেছেন। তার এই সিদ্ধান্তের কথা রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছেন বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

নিউজিল্যান্ডে ভূমিকম্প, নিহত ৬৫


নিউজিল্যান্ডের সাউথ আইল্যান্ডে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী ক্রাইস্টচার্চে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৬৫ জন নারী-পুরুষ-শিশু। সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১২-৫১ মিনিটে প্রবল কম্পনে কয়েক মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় নগরীর বিশাল এলাকা। 'ক্রাইস্টচার্চ নগরীর মাত্র দশ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ভূ-গর্ভের পাঁচ কিলোমিটার নিচে এই ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী জন কি এই দুর্যোগে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কথা জানিয়ে সারাদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। দমকল বাহিনী জানিয়েছে, দালানকোঠা ও উঁচু ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বহু নর-নারী ও শিশু আটকা পড়ে রয়েছে। সরকারি ঘোষণায় গত সেপ্টেম্বর-পরবতর্ী ৭ দশমিক ১ মাত্রার প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের চাইতেও সোমবারের ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা ব্যাপক ও মারাত্মক বলে জানানো হয়েছে। ঐ সময় প্রবল কম্পনে কেউ নিহত হয়নি। যদিও সম্পদের ক্ষতি হয়েছিল তিনশ' কোটি ডলারের। তখন ক্রাইস্টচার্চ নগরী থেকে উৎপত্তিস্থল ছিল আরো দূরে এবং ভূ-গর্ভের আরো নিচে।

মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে শহরটিতে দ্বিতীয় দফা ভূমিকম্পের পর টেলিভিশন সম্প্রচারে দেখা যায়, বিধ্বস্ত বিল্ডিংয়ের ভেতর থেকে মানুষজনকে বের করে আনা হচ্ছে। পুলিশ ভূমিকম্পে অনেক হতাহতের আশঙ্কা করছে। ভূমিকম্পের পরপরই বন্ধ করে দেয়া হয় বিমানবন্দর, বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদু্যৎ সরবরাহ ও টেলিযোগাযোগ। নগরীর রাজপথ ধ্বংসস্তূপে ছেয়ে যায়। উঁচু ভবনের ধ্বংসস্তূপ রাজপথে এসে পড়লে চাপা পড়ে যানবাহন। বিভিন্নস্থানে ভূমিকম্পের সাথে অগি্নকাণ্ড শুরু হয়। একটি বৃহৎ ধ্বংসস্তূপের নিচেই অন্তত ত্রিশজন আটকা পড়েছে বলে জানা গেছে। নগরীর কেন্দ্রে বহু ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করার দৃশ্য টেলিভিশনে দেখানো হচ্ছিল। নগরীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পাথরে নির্মিত ক্রাইস্টচার্চ ক্যাথেড্রালের আংশিক ধ্বংস সাধিত হয়েছে। এর কয়েকটি স্তম্ভ ও খিলান ভেঙ্গে পড়ে। রয়টার্স ও বিবিসি জানায়, উদ্ধার তৎপরতায় সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। রাজপথে ঠাঁই নিয়েছে বহু মানুষ। নগরীর মেয়র বলেছেন, চার লাখ মানুষের বসতি এই নগরী যুদ্ধবিধ্বস্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে। বিদু্যৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পানি সরবরাহের প্রধান সব পাইপলাইন ফেটে গিয়ে রাজপথে বন্যার সৃষ্টি হয়। আহতদের হাসপাতালে নেয়ার ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স সঙ্কট দেখা দেয়।